যথারীতি রাজা মেজবাহ রাণী শিরিন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  দেশের ট্র্যাক এন্ড ফিল্ডে যথারীতি রাজার মুকুট পড়লেন স্প্রিন্টার মেজবাহ আহমেদ এবং রাণীর খেতাব ধরে রাখলেন শিরিন আক্তার। গতকাল বিকালে জাতীয় সামার অ্যাথলেটিক্সের শেষ দিন পুরুষদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে মেজবাহ ১০.৮০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌড় শেষ করে জিতে স্বর্ণপদক। ঘরোয়া আসরে এটা তার ষষ্ঠ স্বর্ণ জয়। সবমিলিয়ে জাতীয় অ্যাথলেটিক্সে তিনবার, সামারে দু’বার ও অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে একবার সেরা হয়ে দেশের দ্রততম মানবের খেতাবটা নিজের দখলেই রাখলেন নৌবাহিনীর অ্যাথলেট মেজবাহ। এই ইভেন্টে ১০.৯০ সেকেন্ড সময় নিয়ে নৌবাহিনীর কাজী শাহ ইমরান দ্বিতীয় ও ১১.১০ সেকেন্ড সময়ে সেনাবাহিনীর শরিফুল ইসলাম তৃতীয়স্থান পান। সামারে স্বর্ণ জিতে দেশের দ্রততম মানবের খেতাব ধরে রাখতে পেরে দারুন উচ্ছ¡সিত মেজবাহ। তবে নিজের টাইমিং নিয়ে খুব একটা খুশী নন তিনি। মেজবাহ বলেন, ‘এই টাইমিংয়ে আসলে আমি খুশি নই। কিন্তু এই ট্র্যাকে আসলে এরচেয়ে ভালো টাইমিং করাও সম্ভব নয়। কারণ অনেক পুরান হয়ে গেছে এখানকার ট্র্যাক। তাই  হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আসলে আমার লক্ষ্য ছিল শামীম স্যারের (সাবেক দ্রততম মানব) টানা ছয়বারের রেকর্ড ছোঁয়া এবং অবসর নেওয়া। তার রেকর্ড স্পর্শ করতে পেরে অবশ্যই ভালো লাগছে। দারুণ খুশি আমি।
আগামী মাসেই লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ। এ আসরে ভালো কিছু প্রত্যাশা ছিল ছয়বারের দ্রততম মানবের। সেটা হয়েছে। সামারের স্বর্ণ জয় তার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বলে জানান তিনি। তবে মেজবাহ’র আক্ষেপ ইলেক্ট্রোনিক স্কোর বোর্ডের। মেজবাহ’র কথা, ‘আরও ভালো কিছু করতে হলে আমাদের সবকিছু আর্ন্তজাতিক মানের হতে হবে। যেমন ইলেক্ট্রনিক টাইমিং হলে ভালো হয়। ক’দিন আগে কিন্তু আমি ভুবনেশ্বরে ইলেক্ট্রনিক টাইমিং ১০.৮৮ সেকেন্ডে দৌড়ে এসেছি। ফেডারেশন কর্তাদের কাছে আমার অনুরোধ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তারা যেন ইলেক্ট্রোনিক স্কোর বোর্ড স্থাপনের ব্যবস্থা করেন।’
অন্যদিকে তিনটি জাতীয় ও দু’টি সামার মিটে রানীর মুকুট পড়লেন দেশের সেরা নারী স্প্রিন্টার শিরিন আক্তার। কাল সামার অ্যাথলেটিক্সে মহিলাদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেরা হতে তিনি সময় নিলেন ১২.৩০ সেকেন্ড। যদিও ইলেক্ট্রোনিক্স টাইমিংটা তার ১১.৯৯। তারপরও স্বর্ণ জিতে নিজের টাইমিং নিয়ে খুব বেশি সন্তুষ্ট নন শিরিন। তিনি বলেন,‘আবারও সেরা হতে পেরে খুব আনন্দ লাগছে। কিন্তু নিজের টাইমিং নিয়ে সন্তুষ্ট নই আমি। আসলে আজকে (কাল) বাতাস ছিল। তাই হয়তো একটু অসুবিধা হয়েছে। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে আক্ষেপ করেন শিরিন। তার কথা, ‘ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ণশিপে হয়তো একজনের যাওয়ার সুযোগ ছিল। এ কারণেই মেজবাহ যাচ্ছে। যদি দু’জনের যাওয়ার সুযোগ থাকতো, তাহলে আমিও যেতে পারতাম।’ নেপালে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমস নিয়ে বেশ আশাবাদি নৌবাহিনীর অ্যাথলেট শিরিন। এই গেমস নিয়ে দ্রততম মানবী বলেন, ‘দেখুন অসম্ভব বলে কিছু নেই। আমার মনে হয়, এসএ গেমসে স্বর্ণ জিততে পারবো আমি। পারতেই হবে, এমন একটা মনোভাব আমার আছে। এখন কাফি স্যারের কাছে অনুশীলন করছি। বিকেএসপির ডিজি স্যারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি, যদি এভাবেই অনুশীলন চালিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমার বিশ্বাস আমি সফলতা পাবো।’ মহিলাদের এই ইভেন্টে ১২.৪০ সেকেন্ড সময় নিয়ে একই দলের সোহাগী আক্তার দ্বিতীয় ও ১২.৮০ সেকেন্ড সময়ে সেনাবাহিনীর সুষ্মিতা ঘোষ তৃতীয়স্থান পান।
কিছুদিন আগে শেষ হওয়া ইসলামিক সলিডারিটি গেমস অ্যাথলেটিক্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নারী অ্যাথলেট আলিদা শিকদার। এটা নিয়ে অবশ্য আক্ষেপ নেই শিরিনের। তিনি বলেন, ‘আসলে ওভাবে রাগ বা অন্য কিছু ছিল না। আমাদের অভিভাবকরা যেভাবে মনে করেছেন, সেভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমার এগুলো নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আমার মাথা ব্যাথা আমার পারফরম্যান্স নিয়ে। আমাকে কোথায় পাঠাবে, কোথায় পাঠাবে না এসব নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই। এটা কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা। তবে যতদিন ট্র্যাকে থাকবো ততদিন আমাকে ভালো করতেই হবে, এটা আমার ইচ্ছা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর